Transformer Basics and Working Principle in Bengali | বৈদ্যুতিক ট্রান্সফরমার বেসিক ও কার্যপ্রনালী
বন্ধুরা আপনারা সবাই কেমন আছেন? আশাকরি সবাই ভাল আছেন আমিও অনেক ভাল আছি। তো বন্ধুরা আজকে আমরা আমাদের আলোচনার বিষয় হচ্ছে ট্রান্সফরমার বেসিক কার্যপ্রনালী।আমি মনে করি ট্রান্সফরমার হচ্ছে ইলেকট্রিক্যাল জগতেরি একটি বিষ্ময়। আসলে ট্রান্সফরমার ছাড়া ইলেকট্রিক্যাল জগৎ কল্পনা করা যায় না। তাই আমি আজকে ট্রান্সপরমারের একদম বেসিক কিছু বিষয নিয়ে আলোচনা করব। তাহলে চলুন শুরু করে দেই।
What is Transformer ? ট্রান্সফরমার কি ?
ট্রান্সফরমার (Transformer basics) এমন একটি ইলেকট্রোস্ট্যাটিক (Electromagnetic) ডিভাইস যা কোন রুপ ফ্রিকুয়েন্সি (Frequency) এবং পাওয়ার পরিবর্তন না করে ইলেকট্রোম্যাগনেটিক ইন্ডাকশন নীতির উপর ভিত্তি করে এক সার্কিট হতে অন্য সার্কিটে বিদ্যুৎ শক্তি স্থানান্তরিত করে তাকে ট্রন্সফরমার (Transformer) বলে।
ট্রান্সফরমারকে কে X-former ও বলা হয়।
ট্রান্সফরমার কিভাবে কাজ করে ? How does Transformer Basics Work?
ফ্যারাডের সূত্র (Faraday's Low) হতে আমরা জানি, ইমএমএফ (EMF) আবিষ্ট হতে তিনটি জিনিস লাগে। যেমন:
- পরিবাহী (Conductor)
- চুম্বকক্ষেত্র (Magnetic Field)
- পরিবাহী ও চুম্বকক্ষেত্রের মধ্যকার সম্বন্ধসূচক গতি (Related Speed Between Conductor and Magnetoshere)
এখন আমরা যখন ট্রান্সফরমারের (transformer) প্রাইমারীতে এসি (AC) ইনপুট দিব তখন প্রাইমারী কয়েলে ইএমএফ আবিষ্ট হবে এবং কারেন্ট প্রবাহিত হবে। ফলে কয়েলের চারপাশে একটি চুম্বকক্ষেত্রের সৃষ্টি হবে। এই চুম্বকক্ষেত্রের ফ্লাক্স কিছু আবার কোরের মাধ্যমে সেকেন্ডারী কয়েলে সংশ্লিষ্ট হবে। এখন আমরা একটু ফ্যারাডের সূত্রের সাথে মিলিয়ে দেখি সেকেন্ডারীতে ভোল্টেজ আবিষ্ট হবে কিনা। সেকেন্ডারীতে কয়েল আছে যা অনেকগুলি পরিবাহীর সমম্বয়ে গঠিত, প্রাইমারী হতে প্রাপ্ত চুম্বকক্ষেত্র আছে বাকি থাকে পরিবাহী ও চুম্বকক্ষেত্রের মধ্যকার সম্বন্ধসূচক গতি। সেটাও আছে, কারন আমরা যেহেতু এসি (AC) সাপ্লাই দিয়েছি তাই এর দ্বারা উৎপন্ন চুম্বকক্ষেত্রটিও পরিবর্তনশীল। কি বুঝলেন না? আচ্ছা দেখুন এসি সাপ্লাই এর পজিটিভ ও নেগেটিভ প্রান্ত বারবার পরিবর্তন হয় । অর্থাৎ একবার পজিটিভ একবার নেগেটিভ হচ্ছে। সুতারং এর দ্বারা উৎপন্ন চুম্বকক্ষেত্রের মেরু ও বারবার পরিবর্তিত হতে থাকবে । অর্থাৎ একবার নর্থ পোল একবার সাউথ পোল। তাহলে দেখা যাচ্ছে এখানে ফ্যারাডের তিনটি শর্তই পূরন হয়ে গেছে সুতরাং সেকেন্ডারীতে ইএমএফ আবিষ্ট হবে । তো বন্ধুরা এভাবেই ট্রান্সফরমারে (Transformer) সেকেন্ডারীতে ভোল্টেজ বা ইএমএফ আবিষ্ট হয়।
এই আবিষ্ট ইএমএফ এর পরিমান সেকেন্ডারী কয়েলের প্যাচ সংখ্যা বা রেশিও এর উপর নির্ভর করে।
ট্রান্সফরমারের শর্ত সমূহ | Transformer Basics Conditions
- উভয় কয়েলের মধ্যে কোন রুপ ইলেকট্রিক্যাল সংযোগ ছারাই পাওয়ার এব সার্কিট হতে অন্য সার্কিটে প্রেরন করে।
- Electromagnetic Induction নীতিতে চলে।
- কয়েলদ্বয় অভিন্ন আয়রন কোর দ্বারা চুম্বকীয় ভাবে যুক্ত থাকে।
- কয়েলদ্বয়ে আবিষ্ট ভোল্টেজ এবং কারেন্টের পরিমান এদের প্যাচ সংখ্যার উপর নির্ভর করে।
- দুই কয়েলেই পাওয়ার সমান থাকবে ।
- ফ্রিকুয়েন্সি অপরিবর্তিত থাকবে।
- হাই সাইডে প্যাচ বেশি এবং লো সাইডে প্যাচ কম থাকবে।
- একে অপরকে চুম্বকীয় ভাবে প্রভাবিত করবে।
আদর্শ ট্রান্সফরমারের বৈশিষ্ট | Ideal Transformer Character
- ওয়াইন্ডিং রেজিস্ট্যান্স নাই বা খুবই নগন্য।
- উৎপন্ন সমস্ত ফ্লাক্স কোরে সীমাবদ্ধ থাকবে।
- কোন লীকেজ ফ্লাক্স নেই।
- কোরের কোন প্রকার লস নেই।
Fleming's Left Hand Rule for DC Motor Easy Explanation in Bangla | ফ্লেমিং এর বামহস্থ নীতির সহজ ব্যাখ্যা
ট্রান্সফরমারের বিভিন্ন অংশ | Transformer Parts
- কোর : কোর হচ্ছে ট্রান্সফরমারের একধরনের আন্ত কাঠামো এবং এই কাঠামোর উপর প্রাইমারী ও সেকেন্ডারী ওয়াইন্ডিং বসানো হয়। কোর মূলত দুই ধরনের হয় , কোর টাইপ এবং শেল টাইপ । এটি লেমিনেটেড স্টিল এর পাতলা শিট দ্বারা তৈরী। শিট গুলোর পুরুত্ব ০.২৫-.৫০ মি. মি. হয়ে থাকে।
- ওয়াইন্ডিং : সিঙ্গেল ফেজ ট্রান্সফরমারের জন্য প্রাইমারী ও সেকেন্ডারী দুটি ওয়াইন্ডিং থাকে। তিন ফেজ এর ক্ষেত্রে অনুরুপ মোট ছয়টি ওয়াইন্ডিং থাকে। সুপার এনামেল কপার ওয়ার দ্বারা এই ওয়াইন্ডিং করা হয়।
- ট্যাংক : ট্রান্সফরমার ট্যাংক ইস্পাতের চাদর দ্বারা মোড়ানো থাকে এবং এতে কোর ও কয়েল তেলে ডুবানো থাকে।
- কনজারবেটর: কনজারবেটর হচ্ছে এক ধরনের অতিরিক্ত ট্যাংক । যখন মূল ট্যাংকের এর তেল গরম হয়ে বেড়ে যায় তখন বাড়তি তেল এই ট্যাংকে চলে আসে । সেজন্য কনজারবেটর ও মূল ট্যাংকের সাথে একটি পাইপ লাগানো থাকে।
- ব্রিদার: ট্রান্সফরমারের এই অংশ এর গরম বাতাস বাইরে বের করা এবং বাহির হতে জলীয় বাষ্পমুক্ত বাতাস ভিতরে সরবারহের কাজ করে।
- বুখলজ রিলে: এটি ট্রান্সফরমারের কনজারবেটর ও মূল ট্যাংকের সংযোগকারী পাইপে লাগানো থাকে। ট্রান্সফরমারে গ্যাস জমলে স্বয়ক্রিয়ভাবে ট্রান্সফরমারকে বন্ধ করে দেয়।
- বুসিং: কয়েল ওয়াইন্ডিং এর প্রান্ত গওলো বাইরে বের করার জন্য বুসিং ব্যাবহার করা হয়। প্রাইমারী সাইডের বুসিং ছোট ও চিকন হয় এবং সেকেন্ডারী সাইডের বুসিং মোটা ও বড় হয়।
বন্ধুরা আজকে এতটুকুই । আগামী পর্বে আমরা ট্রান্সফরমারের প্রকারভেদ , লস ও লস কমানোর উপায় নিয়ে আলোচনা করব।
AC Circuit Fundamental in Bangla | এসি সার্কিটের খুটি নাটি তথ্য জানতে এখানে ক্লিক করুন
এই পর্যন্ত সবাই ভাল থাকবেন । আর যদি আজকের লেখাটি ভাল লেগে থাকে তাহলে কমেন্ট ও শেয়ার করতে ভুলবেন না। তাছারা এই বিষয়ে কোন প্রশ্ন বা আজকের লেখায় কোন ভুল থাকলে তা কমেন্টে জানিয়ে দিলে আমি কৃতজ্ঞ থাকব।
ধন্যবাদ সবাইকে।
Very good information
ReplyDelete