সেমিকন্ডাক্টর বা অর্ধপরিবাহী সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা পর্ব-০১| Semiconductor Details in Bangla Part-01
Semiconductor Devices |
হ্যালো প্রিয় পাঠক বন্ধুরা সবাই কেমন আছেন ? আশা করি সবাই ভাল আছেন । আজকে আমরা ইলেকট্রনিক্স এর সবথেকে গুরুত্বপূর্ন একটি অংশ নিয়ে আলোচনা করব । হ্যা বন্ধুরা আজকে আমাদের আলোচনার বিষয় সেমিকন্ডাক্টর (Semiconductor)। সেমিকন্ডাক্টরের অনেক ছোট ছোট বিষয় আছে, যেগুলি আমাদের অনেকেরই বুঝতে সমস্যা হয় । তাই আজকে আমি সেই জটিল বিষয় গুলি সহজ ভাবে উপস্থাপন করার চেষ্টা করব। আমরা এই বিষয়টা দুইটি পর্বে ভাগ করে নিয়েছি কারন এটি অনেক বড় একটা বিষয় তাই সব একসাথে দিলে আপনারা বোরিং ফিল করতে পারেন। তাহলে বন্ধুরা চলুন শুরু করে দেই।
বন্ধুরা সেমিকন্ডাক্টর বুঝতে হলে আগে আমাদের বুঝতে হবে কোন পদার্থের পরিবাহীতা (Conductivity) কিভাবে নির্ধারন করা হয়। যেকোন পদার্থের পরিবাহীতা নির্ধারন করা হয় তার ভেলেন্স ইলেকট্রনের (Valance Electron) সংখ্যা দিয়ে। অর্থাৎ পদার্থটি কি পরিবাহী, অপরিবাহী নাকি অর্ধ-পরিবাহী সেটা আমরা ভেলেন্স ইলেকট্রন সংখ্যা দেখলেই বুঝতে পারি।
ভেলেন্স ইলেকট্রন হচ্ছে কোন পরমানুর ইলেকট্রন বিন্যাসের শেষ কক্ষপথের ইলেকট্রন সংখ্যা। যেমন লিথিযামের (Li) মোট ইলেকট্রন সংখ্যঅ ৩ এবং এর ভেলেন্স ইলেকট্রন বা শেষ কক্ষপথের ইলেকট্রন সংখ্যা ১ টি। উপরের পর্যায় সারনী থেকে আমরা সহজেই বুঝতে পারি কোন মৌলের ভেলেন্স ইলেকট্রন কত।
সেমিকন্ডাক্টর বা অর্ধপরিবাহী (Semiconductor) কি ?
যেসকল মৌলের শেষ কক্ষপথে চারটি ইলেকট্রন (Electron) আছে বা কন্ডাক্টরের চাইতে বিদ্যুৎ পরিবাহীতা কম তাদের সেমিকন্ডাক্টর (Semiconductor) বলে।
মূলত যাদের শেষ কক্ষপথে ১টি, ২টি বা ৩টি ইলেকট্রন থাকে তাদের কন্ডাক্টর বা সুপরিবাহী বলে এবং যাদের শেষ কক্সপথে চারটির বেশি ইলেকট্রন আছে তাদের ইনসুলেটর বা অপরিবাহী বলে।
সেমিকন্ডাক্টর পদার্থের রেজিস্ট্যান্স ০.৫ ওহম থেকে ৫০ ওহমের মধ্যে হয়ে থাকে । উদাহরনঃ জার্মেনিয়াম, সিলিকন, কার্বন ইত্যাদি।
এখন আমরা নিচের চিত্র হতে পরিবাহী, অর্ধপরিবাহী ও অপরিবাহীর এনার্জিব্যান্ড ডায়াগ্রাম গুলো দেখি।
Energy Band Diagram |
এখানে প্রথমে আছে ইনসুলেটর বা অপরিবাহীর এনার্জীব্যান্ড এর ব্যান্ড গ্যাপ সবচেযে বেশী দেখা যাচ্ছে। এখন এর মধ্য দিয়ে কারেন্ট প্রবাহিত করতে হলে আমাদের ব্যান্ড গ্যাপটি বাহ্যিক শক্তি প্রয়োগ করে ভাঙ্গতে হবে । ইনসুলেটরের ক্ষেত্রে এই শক্তির পরিমান 7 ev পর্যন্ত লাগতে পারে। তারপর আছে সেমিকন্ডাক্টর ,আমরা দেখছি সেমিকন্ডাক্টরের ব্যান্ড গ্যাপটি ইনসুলেটর থেকে একটু ছোট এবং এই ব্যান্ড গ্যাপ ভাঙ্গতে 1.1 ev শক্তির প্রয়োজন হয়। তারপর আছে কন্ডাক্টর যার কোন ব্যান্ড গ্যাপ নাই।
সেমিকন্ডাক্টরের প্রকারভেদ (Classification of Semiconductor)
সেমিকন্ডাক্টর মূলত দুই ধরনের । যথাঃ
- বিশুদ্ধ সেমিকন্ডাক্টর (Intrinsic Semiconductor)
- ভেজাল মিশ্রিত সেমিকন্ডাক্টর (Extrinsic Semiconductor)
নিচের চিত্রে আপনারা একটি বিশুদ্ধ সিলিকন (Si) সেমিকন্ডাক্টরের গঠন দেখছেন।
Intrinsic Semiconductor |
P - টাইপ সেমিকন্ডাক্টর (Semiconductor) কি?
বিশুদ্ধ সেমিকন্ডাক্টরের সাথে ত্রিযোজী মৌল (যেমন: অ্যালুমিনিয়াম) মিশ্রিত করে ডোপিং করলে তাকে P টাইপ সেমিকন্ডাক্টর বলে। নিচের চিত্রটি লক্ষ করুন।যে পদ্ধতিতে বিশুদ্ধ সেমিকন্ডাক্টরে ভেজাল মেশানো হয় তাকে ডোপিং বলে।
P Type Semiconductor |
P-টাইপ সেমিকন্ডাক্টরে ম্যাজরিটি চার্জ ক্যারিয়ার হোল এবং মাইনোরিটি চার্জ ক্যারিয়ার ইলেকট্রন।
N-টাইপ সেমিকন্ডাক্টর (Semiconductor) কি?
বিশুদ্ধ সেমিকন্ডাক্টরের সাথে পঞ্চযোজী মৌল (যেমন: ফসফরাস) ভেজাল হিসাবে মিশ্রিত হলে তাকে N টাইপ সেমিকন্ডাক্টর বলে।নিচের চিত্রটি লক্ষ করুন।
N Type semiconductor |
এখানে ভেজাল হিসাবে ফসফরাস (P) মেশানো হলে এর কক্ষপথের ৫ টি ইলেকট্রন হতে চারটি দিয়ে চারটি সিলিকন (Si )পরমানুর সাথে বন্ড তৈরী করে এবং একটি ইলেকট্রন মুক্ত অবস্থায় ঘুরতে থাকে।এভাবে যত বেশী ডোপিং করা হয় তত বেশী মুক্ত ইলেকট্রন বাড়তে থাকে। ফলে কারেন্ট পরিবহন ক্ষমতাও বেড়ে যায়।
ইলেকট্রনের আধিক্যতার কারনে N-টাইপ সেমিকন্ডাক্টর নেগেটিভ চার্জ যুক্ত হয়।
N-টাইপ সেমিকন্ডাক্টরের ম্যাজরিটি চার্জ ক্যারিয়ার ইলেক্ট্রন এবং মাইনোরিটি চার্জ ক্যারিয়ার হোল।
বন্ধুরা এই পর্যন্ত কেমন লাগল ? অবশ্যই কমেন্ট বক্সে জানাবেন এবং যদি বাল লেগে থাকে তাহলে আপনার বন্ধুদের সাথে শেয়ার করতে ভুলবেন না। শীগ্রই আগামী পর্ব নিয়ে হাজির হব। আগামী পর্বটি সরাসরি আপনার ইমেইলে পেতে চাইলে এখনি সাবস্ক্রাইব করে রাখুন। সবাই ভাল থাকবেন ।
ধন্যবাদ
No comments:
Post a Comment